(বাংলা সাহিত্য থেকে অসমিয়া সাহিত্য লাভবান হয়েছে অনেক। এর জন্যে অসমিয়া সাহিত্য ও তার পরিমণ্ডল সম্পর্কে অনেক বাঙালি খবর রাখেন না, ভাবেন বুঝি এতেতো সবই বাংলারই বর্ণ-গন্ধ। কিন্তু তাতে যে কত অজানা বিষয় বাদ পড়ে যায়, নিজের রাজ্যটি সম্পর্কেও অজ্ঞতার পাহাড় জমা হয়--- এই কথা ভাববার সময় হয়ে এলো। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাংলা সাহিত্য চর্চার জগতে আজকাল জোয়ার এসছে। অসমিয়া সাহিত্যের প্রতি বাড়িয়ে দেয়া বন্ধুত্বের হাত এই জোয়ারে জোর এনেছে। বরাক উপত্যকাতে বোধহয় সেটি সবে শুরু হচ্ছে। সম্প্রতি অসম সাহিত্য সভা এক নতুন চেহারা নিয়ে বরাক উপত্যকা ভ্রমণ করে এলো। এই গেল ০৮ জানুয়ারী থেকে ডিগবয়তে অনুষ্ঠিত সারা অসম লেখিকা সংস্থার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়ে এসছেন বরাক উপত্যকার দুই কবি বিজয় কুমার ভট্টাচার্য ও তুষার কান্তি নাথ। দীর্ঘদিন পরে শুধু ওদের দু’জনের সঙ্গে আড্ডা দিতে ওখানে গেছিলাম ৮ তারিখের সন্ধ্যে বেলা। সম্মেলনের শেষে ১০ই সকালে যখন বিজয়দা ও তুষারদাকে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন অভিজ্ঞতা? ওরা দু’জনেই বললেন দারুণ। তাঁরা অভিভূত। বিজয়দা তাঁর স্বভাবসুলভ ভংগীতে সেখানে শোনালেন উনিশ-একুশের কবিতা। এই কী বড় কম প্রাপ্তি? বিজয়দা ও তুষারদা নিশ্চয়ই শোনাবেন বরাক উপত্যকার পাঠকদের তাঁদের ভ্রমণের কথা। আমার তখনই মনে পড়ল অসমিয়া লেখিকাদের অন্য একটি সংগঠন লেখিকা সমারোহ সমিতি ও তার প্রতিষ্ঠাতৃকে নিয়ে আমার এক দীর্ঘদিন আগের অপ্রকাশিত লেখা রয়েছে। কেন না এই সুযোগে সেটি পড়াই (বরাকের) পাঠকদের? লেখাটি চার বছর আগে লিখেছিলাম শিলচরের এক ছোট কাগজের জন্যে। কাগজটির সেই সংখ্যা বেরোয়নি। সামান্য সম্পাদনা করে ভাবলাম এটিকে এখনো প্রকাশ করা যায়।-লেখক )
লেখাটি ছেপেছে শিলচরের দৈনিক জনকন্ঠ, তাদের ১৪ জানুয়ারী,১০ সংখ্যাতে। তাঁরা এর শিরোনাম পালটে দিয়েছে। লিখেছে, " আসামের সাহিত্য চর্চা এবং এক নীরব সাহিত্য সাধিকার কথা' । অসমের সাহিত্য চর্চা বললে কেবল অসমিয়া সাহিত্য বোঝায় না, না বরাকের বললে বোঝায় কেবল বাংলা। সুতরাং এখানে সম্পাদক ভুল করেছেন। দ্বিতীয়ত শীলা কেব্ল সাহিত্য সাধিকা নন। এ লেখাতেও ঐ কথাগুলো রয়েছে। এদিক থেকেও ভুল। তার উপর নির্মলপ্রভা বরদলৈর এতো সুন্দর কবিতার কিছু পংক্তি উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্ভবত যিনি সম্পাদনা করেছেন তিনি নির্মল প্রভার উচ্চতা সম্পর্কে কোনো খবরই রাখেন না। সে রকম করতে গেলে যে মাঝে যে কিছু ডট বসাতে হয় সে নিয়মও মানা হয় নি। --লেখক )
লেখাটি ছেপেছে শিলচরের দৈনিক জনকন্ঠ, তাদের ১৪ জানুয়ারী,১০ সংখ্যাতে। তাঁরা এর শিরোনাম পালটে দিয়েছে। লিখেছে, " আসামের সাহিত্য চর্চা এবং এক নীরব সাহিত্য সাধিকার কথা' । অসমের সাহিত্য চর্চা বললে কেবল অসমিয়া সাহিত্য বোঝায় না, না বরাকের বললে বোঝায় কেবল বাংলা। সুতরাং এখানে সম্পাদক ভুল করেছেন। দ্বিতীয়ত শীলা কেব্ল সাহিত্য সাধিকা নন। এ লেখাতেও ঐ কথাগুলো রয়েছে। এদিক থেকেও ভুল। তার উপর নির্মলপ্রভা বরদলৈর এতো সুন্দর কবিতার কিছু পংক্তি উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্ভবত যিনি সম্পাদনা করেছেন তিনি নির্মল প্রভার উচ্চতা সম্পর্কে কোনো খবরই রাখেন না। সে রকম করতে গেলে যে মাঝে যে কিছু ডট বসাতে হয় সে নিয়মও মানা হয় নি। --লেখক )
চর্যাপদের কবিরা কেউ কোনো রাজদরাবারের কবি ছিলেন , এমনটি জানা যায় নি। দু’একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে কোনো এক নির্দিষ্ট ধর্ম সংস্কৃতির কেন্দ্র তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল, এমনটিও শোনা যায় নি। বাংলা-অসম দুই প্রদেশেই বৈষ্ণব-সূফী সাহিত্য চর্চারও এক গণ চরিত্র ছিল---আর তা কোথাও তেমন কেন্দ্রীভূত হতে পারে নি। রাজ দরবারগুলোও শিল্প সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করত বটে। কিন্তু বাংলায় তা যেমন প্রাধান্য পেতে শুরু করেছিল—শঙ্করোত্তর অসমে তার তেমন সুযোগও ঘটেনি, প্রয়োজনও পড়েনি। স্বয়ং শঙ্করদেব কোথাও বেশিদিন স্থির হয়ে বসেন নি, তার রচনাবলীও এক জায়গায় সংরক্ষিত ছিল না। বাংলাতে রাজদরবারের জায়গাটা প্রথমে কলকাতা ও পরে ঢাকা মহানগর নিলেও অসমে অবস্থাটা এখনো প্রায় একই আছে। অসমিয়া শিল্প সাহিত্য কোনো এক শহরকে কখনোই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় আসতে দেয় নি। এখনো দিতে প্রস্তুত নয়। বোধহয় দেওয়া সম্ভবও নয়। আধুনিক অসমে শিল্প সাহিত্য চর্চায় আপাত দৃষ্টিতে গুয়াহাটিকে কেন্দ্রীয় শহরের মতো দেখালেও আমাদের ভুললে চলবে না যে আধুনিক অসমিয়া সাহিত্য তার যাত্রা শুরু করেছিল শিবসাগর- যোরহাট থেকে। এখনো তার সে গৌরব ম্লান হয় নি, তার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় হবার সুবাদে স্বাধীনতা উত্তরকালে ডিব্রুগড়ের নামও যুক্ত হয়েছে। রাজ্যের অন্যতম বড় প্রকাশনা সংস্থাটি এই শহরেই আছে। ‘বনলতা’র একটি শাখা অনেক পরে গুয়াহাটিতে আত্মপ্রকাশ করেছে। সঙ্গীত-অভিনয় কলাতে তেজপুর শতবর্ষ আগে যেমন, এখনো সমান গৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা শুধু ক’টি উদাহরণের নাম নিলাম—আসলে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অজ পাড়াগাঁও এ রাজ্যে নেহাৎ ফেলনা নয়। পাঠশালার থেকে যাত্রা শুরু করে ভ্রাম্যমাণ থিয়েটার আজতো সারা রাজ্যের বিস্ময়! আসলে বিস্ময় সে সারা দেশের। কিন্তু দেশ কি তার এ গৌরবের খবর রাখে? অসমের এই সাংস্কৃতিক চরিত্রের সুবিধেটা বাঙালি শিল্পী সাহিত্যিকের উপলব্ধি করা উচিৎ যারা কলকাতায় না গেলে , কলাকাতার লেবেল না লাগালে কল্কে পানও না, কাউকে সে কল্কে দেনও না।
বাংলার শিল্প সাহিত্যের সবই নগর কেন্দ্রীক বললে ভুল হবে, বস্তুত তা কলকাতা কেন্দ্রীক। অসমের প্রায় সবটাই অজপাড়াগাঁএ। অসমের ‘নন্দন’, রবীন্দ্র সদন’, ‘কলেজ ষ্ট্রীট’, ‘ময়দানের বইমেলা’ নেই বটে—কিন্তু ভ্রাম্যমাণ থিয়েটার, ‘অন্বেষা গ্রন্থমেলা’, ‘সতীর্থ গ্রন্থমেলা’, লেখিকা সমারোহ’ , ‘লেখিকা সংস্থা’ আছে যার গণ চরিত্র সারাদেশে অনন্য। আর এ নিয়ে সমাজতাত্বিক গবেষণা হয় নি যদি , হওয়া উচিত। বস্তুত অসম সাহিত্য সভা, বডো সাহিত্য সভা, মিসিং সাহিত্য সভা, মায় বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনও অসমের নিজস্ব প্রকৃতির দান—ভারতের অন্যত্র এর তুলনা মেলা ভার। সম্প্রতি গড়ে উঠা শঙ্করদেব কলাক্ষেত্র গুয়াহাটিতে গড়ে উঠলেও চু-কা-ফা কলা ক্ষেত্র গড়ে উঠছে যোরহাটে, লক্ষীমপুরের নারায়নপুরে গড়ে উঠছে মাধবদেব কলাক্ষেত্র। আর এর প্রতিটিতে আছে ও থাকবে আম জনাতার সাদর আমন্ত্রণ। পাছে কোনো বনেদী বুদ্ধিজীবির বাঁকা চোখের ঘা আঘাত করে সে ভয়ে সাধারণ দর্শকের সেখানে পা কাঁপে না। যারা ‘নন্দনে’ গেছেন আর শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে গেছেন তারা তফাৎ জানেন। সৌন্দর্যেও এই দ্বিতীয়টির কোনো তুলনাই হয় না। বাংলায় গণসঙ্গীত বলুন, জীবন মুখী গান বলুন নাইবা বাংলাব্যাণ্ড সবেতেই কলকাতার লেবেল সাঁটা না থাকলে কেউ জাতে তুলে না, পাতেও নেয় না। বোধকরি হেমাঙ্গ বিশ্বাসকেও শেষ জীবনে কলকাতার মোহে টেনেছিল। এইতো এখন আমাদের কালিকা প্রসাদকে সিলেটের গান শোনাবার জন্যে কলকাতাতে দৌড়ে গিয়ে ওখানকার তানে ‘দোহার’ দিতে হয়েছে তবেই লোকে তাকে চিনেছে। কিন্তু সেই হেমাঙ্গ বিশ্বাসকেও অসমের অজ পাড়াগাঁ যতটা সসম্মানে জীইয়ে রেখেছে—কলকাতা তততাই দিয়েছে অবজ্ঞা আর উপেক্ষা। গাঁয়ের ছেলে কৃষ্ণমণি চুতিয়া যে ‘চল গোরী, লে যাব তোকে মোর গাঁও’ বলে ডাক দিয়ে সব গাঁয়ের গোরীদের হৃদয় কাঁপিয়ে দেয় তা কোনো বঙ্গ সন্তানের পক্ষে করাটা একটু কঠিন বটে। কারণ তার চাই কলকাতার সার্টিফিকেট।
কম্যুনিষ্ট চিন থেকে পাওয়া একটা গল্প ভারতের বিপ্লবীদের মধ্যে একসময় খুব জনপ্রিয় ছিল। সেই যে ‘বোকা বুড়ার পাহাড় সরানোর গল্প’। আজো কেউ কেউ উদ্ধৃতি দেন দেখি। ভালোই। কিন্তু এরকম কত হাজারো বোকা বুড়া যে পূর্বোত্তরের যেখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে তার খবর নিয়ে রাখলে কী কাজটা আরো ভালো হয় না? এইতো সেদিন দেবজিৎ সাহা যা করে দেখালো সে কাজটা কি বোকা বুড়োর চে’অন্যরকম কিছু ছিল? কিম্বা তার পরে যে সুরভী, সপ্তপর্ণা, অভিজ্ঞানেরা করে যাচ্ছে! দেবজিতের সময়েই মণিপুরের ছোট্ট ছেলে পবন কুমার ( যার তথ্যচিত্র ২০০৬এর মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবে দু’দুটো পুরষ্কার ছিনিয়ে এখন বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে) কিম্বা অরুণাচলের লামা তাসি ( যাকে পূর্বোত্তরেই লোকে চিনেছে গ্র্যামী পুরষ্কারের জন্যে মনোনীত হবার পর) যা করে দেখাচ্ছেন সেও কি বোকা বুড়ার মতো এক অনন্য সাধন নয়? কলকাতাত প্রায় সবটাইত বৃটিশ ভারতের পড়ে ‘পাওয়া চৌদ্দ আনা’—মায় কলকাতা নিয়ে গৌরবের ব্যাপারটাও ‘লণ্ডন’ ,‘পেরিস’ নিয়ে উপনিবেশিকদের গৌরবের নকলে গড়া। যেটি এমন কি পুরুলিয়ার সাহিত্যিক ব্যাপারকেও ‘আঞ্চলিক; বলে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করত ঐ সেদিন অব্দি, আর বরাক উপত্যকার বাংলা কা কথা! এরা জানে কদ্দূর এর কথা? অসমের মতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এরকম ‘আনায় আনায় আট আনা’ করে দেখাক দেখি!
এমনি এক ‘বোকা বুড়ো’র গল্প আজ বলব। তিনি অবশ্য বুড়ো নন, সত্তরোর্দ্ধ বুড়ি। তাঁর নাম শীলা বরঠাকুর। এই ভদ্র মহিলাকে প্রচারের মোহ কখনোই টানে নি। তিনি যে কোনো বিদেশী গুরুর কাছে নারীবাদের পাঠ নিয়েছেন তাও শোনা যায় নি। তসলিমা নাসরিনের সাথে তাঁর কোনো তুলনাই করা যাবে না। করলে বরং তাঁকে অপমানই করা হবে। কারণ গত ত্রিশ বছরে অসমের মাটিতে তিনি যে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন তসলিমা এবং তাঁর স্তাবকেরা তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবেন না।
১৯৩৫ এর কোনো এক সময় যোরহাটের কাছে চারেঙিয়া বলে এক গাঁয়ে তাঁর জন্ম ।ছেলেবেলা ক’বছর বাবার সঙ্গে গিয়ে ঢাকাতেও কাটিয়েছেন। তাঁর আবাল্য ভালোবাসার বিষয়টি ছিল সঙ্গীত। মাত্র চার বছর বয়সে ১৯৩৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ‘দিয়া আহুতি, লোয়া অর্ঘ আলহী মহান’ গানটি গেয়ে প্রশংসা কুড়োবার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর। ১৯৪৯তে মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে গুয়াহাটি বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত গায়িকা হবার যোগ্যতা অর্জন করে নেন। ১৯৫৬তে অসম সরকারের বৃত্তি পেয়ে বিশ্বভারতীতে সঙ্গীত শেখার সুযোগ পান। ১৯৬১ তে ভাতখণ্ডে সঙ্গীত বিদ্যাপীঠ থেকে সেতারে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে বাদ্য বিশারদ উপাধি লাভ করেন। এভাবে এগুতে থাকলে তাঁকে আমরা আজ অসমের এক অনন্যা সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে পেয়ে যেতেও পারতাম। কিন্তু যে পথ চেনা হয়ে গেছে, যে পথে আরো অনেক পথিক—সে পথ ধরে হাঁটা বোধহয় তাঁর স্বভাবের বাইরে ছিল।
সত্তর দশকের শুরুর দিকে রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাও যে সে এক্কেবারে কংগ্রেসের রাজনীতিতে। দিনকতক দরং জেলায় মহিলা কংগ্রেসের আহ্বায়িকার দায়িত্বও পালন করেন। যে যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে ততদিনে কেউকেটা হতেও পারতেন। কিন্তু পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনায় যার প্রাসাদ গড়া, তাঁর কিসের সুখ?
১৯৭২ সনে ‘মহিলা শিল্পানুষ্ঠান’ নামে এক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। রাজনীতির সাংগঠনিক দক্ষতাকে এভাবেই কাজে লাগিয়ে তাঁর মনে হলো দুস্থ মেয়েদের হাতের কাজ শিখিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলবেন। ভালই চলছিল। কয়েকশ’ মহিলা তাতে নানা সময়ে যোগ দিয়ে তাঁর স্বপ্নকে যতই সাকার করে তুলছিল তাঁর স্বপ্নের দিগন্ত ততই বিস্তৃত হচ্ছিল। তাঁর মনে হচ্ছিল মেয়েদের বৌদ্ধিক জগৎটাকেই নাড়িয়ে দিতে হবে। মেয়েরা শুধু হাত খাটাবে আর মাথা খাটাবে সব ছেলের দল—খাটাখাটুনির এই ভাগাভাগির ব্যাপারটাই তাঁর পোষাচ্ছিল না। তাঁর কাজের পথেও এ বিভাজন তাঁকে প্রচুর বাধার মুখে দাঁড় করাচ্ছিল।
ইচ্ছে করলেই তিনি মেয়েদের স্কুল খুলেই চুপচাপ চালিয়ে যেতে পারতেন। অধ্যাপনাকে বৃত্তি হিসেবে নিয়েওছিলেন। তেজপুর গার্লস কলেজের প্রতিষ্ঠাতৃ অধ্যক্ষাও ছিলেন। জ্ঞানের প্রতি তাঁর আগ্রহ এতো প্রবল ছিল যে প্রায় ষাট বছর বয়সের কাছে এসেও, এই সেদিন ১৯৯৩তে পি এইচ ডি ডিগ্রীর জন্যে গবেষণাও করে ফেলেন। বয়সকে কাঁধে তুলে যারা নুয়ে পড়েন তিনি সে দলের কেউ নন। বয়সের কাঁধে চড়ে যারা দুনিয়া চষে বেড়ায় তিনি ঠিক সেই তাদের অগ্রপথিক। বিষয় ছিল, “Social Change in Assam: Since Independence with Special Reference to Sonitpur District.” কিন্তু এহ বাহ্য! এ আর এমন কী? এতো খুবই জানা পথ, চেনা মুখ। সব শহরেই এমন মহিলার দেখা না মিলল, তবে আর একুশ শতকে এসে পৌঁছুবার আমাদের এতো গর্ব কিসের?
কিন্তু কেউ কি কখনো শুনেছে সেলাই স্কুলের মেয়েদের নিয়ে কেউ কখনো একটা সাহিত্য সংগঠন করার কথা ভেবেছে? এই না হলে আর ‘বোকা বুড়ি’ বলে কাকে? এমনই এক বোকা বোকা প্রস্তাব ১৯৭৪ এর গোড়ার দিকে ঐ মহিলা শিল্পানুষ্ঠানের সাধারণ সভায় এগিয়ে ধরেন শীলা। যারা হাসবার তারা হেসেছে। হয়তো কেঁদেছেও কেউ কেউ। বয়স তখন তাঁর চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। এ বয়সের এমন এক বিদূষী পাগল হলে কাঁদবার কথা বটে। কিন্তু ১৯৭৫ এ ‘সদৌ অসম লেখিকা সমারোহ সমিতির’ প্রতিষ্ঠা হয়েই গেল তেজপুরে। জ্যোতিপ্রসাদ, বিষ্ণু রাভা, ভুপেন হাজারিকা, ফনি শর্মার তেজপুরে। শীলা তার প্রতিষ্ঠাতৃ সভানেত্রী।
এখন তাহলে পাঠক জেনে গেছেন আমরা কোন পাহাড় সরানোর গল্প বলছি। হ্যাঁ, এখন ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় পার করে ঐ সংগঠনের শাখা কোথায় নেই? বরাক উপত্যকায় নেই। তার সঙ্গত কারণ আছে। কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের দু’পারে অজ পাড়াগাঁয়েও তার শাখা প্রশাখা ছড়িয়ে আছে। সে সংখ্যা আজ দু’শরও বেশি হবে। ডিমাপুর, শিলঙের মতো পূর্বোত্তরের অন্য দুই শহরেতো বটেই কলকাতা, দিল্লী অব্দি এর সক্রিয় শাখা রয়েছে। প্রায় প্রতিটি শাখার রয়েছে নিজস্ব মুখপত্র এবং প্রকাশন। আর সবই করেন মেয়েরা। বরাকেও সম্প্রতি বাংলা ভাষী লেখিকাদের এমন দু’একটি প্রয়াস চোখে পড়ে বটে। এই যেমন ‘নন্দিনী’ ছোট কাগজের মেলা বসিয়ে দিয়েছে। মেয়েদের এমন আদিখ্যেতার বহর দেখে বহু পুরুষ ‘ভালোলেখকে’র নাক কোঁচকানোর কথাও আমরা জানি। শীলাকেও এমন অভিজ্ঞতার মধ্যি দিয়ে যেতে হয় নি বললে মিথ্যে বলা হবে। কিন্তু তাতেই বা কি? আজ যে মামণি রয়সম গোস্বামী। নিরুপমা বরগোহাঁই, অরূপা পতঙ্গীয়া কলিতা , অনুরাধা শর্মা পূজারী, মণিকুন্তলা ভট্টাচার্যদের ভিড় অসমিয়া সাহিত্যে লেখিকা সমারোহ ছাড়া তার কতটা সম্ভব ছিল সন্দেহ আছে। এমন কোনো লেখিকা নেই আজ যিনি এ সংগঠনটির সঙ্গে সাথে কোনো না কোনো ভাবে জড়িয়ে নেই। লেখিকা মাত্রের কাছেই সমারোহের সদস্যা হওয়াটা ধর্ম স্বরূপ। সমারোহের সভা অনুষ্ঠান আদিই তাদের ‘নামঘর।’ আর হবে না কেন? স্বামী-শ্বশুরের সেবা যত্ন করে, শাশুড়ী ননদীর গঞ্জনা শুনে, ছেলেমেয়েদের পায়খানা পেচ্ছাব পরিচ্ছন্ন করে, অতিথি অভ্যাগতদের আপ্যায়ন করে , রাঁধাবাড়া, কাপড়কাঁচা, ঝাড়ামোছা সাজগোজ করার পর যে মেয়েরা বলে, আর কোনো দিকে তাকাবার তাদের অবসর জোটে না—এখন সে কথাগুলোই তারা লেখে। শ’য়ে শ’য়ে হাজারে হাজারে। গত তিন দশক জুড়ে এ এক রেকর্ড । কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের হাত না ধরেই- এ এক নীরব সাংস্কৃতিক বিপ্লব। তার জন্যে কেউ নারীবাদের কাছেও দীক্ষা নেয় নি—যদি পরে সে মতবাদে কেউ নাম লিখিয়েছে বা ঐ আন্দোলনকেও কেউ নারীবাদ বলে চালিয়ে দিয়েছে তবে সে অন্য কথা। কিন্তু এ ‘সমারোহ’ অসম দেশের মাটির ফসল—“ এমন দেশটি কোথাও খোঁজে পাবে নাকো তুমি।”
যারা রাজ ঘারানার লোক-তার মানে শিল্প সাহিত্যের ‘নবরত্ন’ সংস্কৃতিতে অভ্যস্থ তাদের এসব শুনে খুব হাসি পাবে। সে আমরা জানি। তারা ‘হো! হো! ‘ করে হেসে বলবে,”শিল্প সাহিত্য কি মুড়ি মুড়কি নি কিরে বাবা, যে হাজারে হাজারে লোকে করবে!” তাদের প্রতি আমাদের জবাব হবে, “ না, জলসাঘরের অধিবাসীদের হাতের রজনীগন্ধা আর আঙুরদানার সঙ্গে এর এক আধটু তুলনা করা চলে বটে। কিন্তু সে ফুল ফলওতো ঝেড়েপোছে বাছাই করা। রাজার গা ঘেঁষা ছেড়ে একটু মাঠে ময়দানে ঘুরুন। চাষা ভূষোদের সাথে কথা বলুন। দেখবেন তারা শোনাবে সহস্র রজনীগন্ধার ঝরে যাবার গল্প---যারা রাজদরবার অব্দি পৌঁছুতেই পারেনি। কিন্তু যদি তাঁরা জন্মাতেই অস্বীকার করত তবে রাজার হাতে যা পৌঁছুতো সে ‘কাঁঠালের আমসত্ব’ রজনীগন্ধা নয়।
সংগঠনটির বীজ বপন করেই শীলা হাত গুটিয়ে বসে পড়েন নি । ‘সমারোহের’ নামটির মতো তাঁর নামটি এতো সুপরিচিত নয় বলে অনেকের এমন ধারণা হতেই পারে। ১৪ বছর তিনি এর প্রধান সম্পাদিকা ছিলেন, ১৩ বছর এর সভানেত্রী। সংস্থার মুখপত্র ‘লেখিকা’র সম্পাদনা করেছেন ১৩টি বছর ধরে। আজ যেটি বিশাল বটবৃক্ষ তার শাখায় শাখায় ঢালা আছে শীলার আপন হাতের জল, পাতায় পাতায় তাঁর ভালোবাসার ছোঁয়া। তবে না সম্ভব হয়েছে এ বিপ্লব।
সংগঠনটি শুধু লেখিকা গড়ে তুলেছে বললে বলা হবে অতি অল্পই। সংগঠন গড়ার কলা আয়ত্ব করতে না পারলে সংগঠন কিসের? যখন এর কোনো সভায় পাঁচ মহিলা জোটে তখন তাঁরা কেবল রান্নার স্বাদ আর শাড়ির আঁচল নিয়ে কথা বলে না। বরং অচিরেই সে কথা রান্না করবার বিস্বাদ আর শাড়ির আঁচল তানার বিবাদের ইতিকথাতে গিয়ে প্রবেশ করে। পরিবার নামের রাষ্ট্রটির ভেতরকার যে রাজনীতি তার কথা পুরষেরা লেখে কৈ—তারা যে বড় রাজনীতি বোঝে না বলে মেয়েদের ব্যঙ্গ করে? এমন সংগঠনে দক্ষ, রাজনীতিতে সচেতন, শিল্প কলায় বিদূষী মেয়েদের সন্তানেরা তাহলে করছে টা কী? হচ্ছেটা কী? খবর করুন। কল্পনা করুন! স্বপ্ন দেখুন...।
চিন দেশের সেই বোকা বূড়ার গল্পে আছে, আকাশের দেবতা শেষে খুশী হয়ে দুই দেবদূত পাঠিয়েছিলেন। তারা এসে সে পাহাড় তুলে নিয়ে গেছিল বুড়ো মারা যাবার আগেই। বুড়ো তখনো তখনো পাহাড় খুঁড়ে চলেছে—আরব্ধ কাজ থেকে ছুটি নেয় নি। ২০০৬এর জানুয়ারি মাসে রঙিয়া শহরে ঠিক ত্রিশ বছর বয়সে ‘সমারোহে’র যে দ্বিবার্ষিক অধিবেশন হয়ে গেল সেখানেও দেবদূতীরা পাহাড় তুলে নিয়ে গেল। বয়স হয়েছে। শরীর বিদ্রোহ করেছে। শীলা তাই সেবারে সক্রিয় দায়িত্ব থকে বিদেয় নিলেন। এখন তিনি বিশ্রামের শিল্প গড়ে চলেছেন। ‘সমারোহ’কে চালিয়ে নেবার জন্যে এখন রয়েছে অজস্র লোক। সে নিয়ে তাঁর না ভাবলেও চলে। ভারত সরকার তাঁর সারা জীবনের কাজের সম্মানে ২০০৮এ পদ্মশ্রী দিয়ে সম্মানিত করেছে।
প্রয়াত নির্মল প্রভা বরদলৈ অসমের এই অনন্যা কন্যাটিকে নিয়ে এক আশ্চর্য সুন্দর কবিতা লিখেছিলেন , ‘শীলা’ নামটির অর্থ এর চে; আর অন্যভাবে লেখাই যেত নাঃ
“ শীলা কি এটা ফুলর পাহি?
শীলা কি এটা সুর?
শীলা কি এধানি সেউজীয়া?
শীলা কি জোনাক জুর?
শীলা যে এক সুষমা
বর্ণ গন্ধর সমাহার।
শীলা যেন এক ছন্দ
মৌন নারীর, নীরব নারীর কণ্ঠর এক মঞ্চ।
শীলা দূরদর্শী এক জাগরণ
গতিহীনতার বুকুত
শীলা যেন বাংময়তা
জাগ্রত, সচেতন।
শীলা পংকজা এক শক্তি
সময়র দৃঢ় আহ্বান
স্থির , প্রজ্জ্বলিত এক শিখা
জাগ্রত এক উত্থান।
শীলা রূপান্তরর শিল্পী
জোনাকী বাটেদি আইদেউক নিয়াব
দেখুয়ালে নিজ পথটি?
মোর অভিনন্দন শীলালৈ
শীলালৈ অভিনন্দন
এনেকুয়া লাগে
শীলা যেন
মোর বুকুরেই স্পন্দন।”
এ কি কেবল নির্মল প্রভারই বুকের কথা? “এনেকুয়া লাগে, শীলা যেন/ মোর বুকুরেই স্পন্দন।” প্রতিজন ‘সমারোহ’ সদস্যাকে জিজ্ঞেস করুন তিনি বলবেন, “এনেকুয়া লাগে, শীলা যেন/ মোর বুকুরেই স্পন্দন।” দিন আসছে, অসমের প্রতিজন মানুষ বলবে, “এনেকুয়া লাগে, শীলা যেন/ মোর বুকুরেই স্পন্দন।” বরাক উপত্যকার বাঙালি সমাজও কী বলবে? বলুন না, মন্দ কী? এওতো অসম—কলকাতার বাতাসে শ্বাস নেবার বৃথা প্রয়াসতো অনেক হলো। এবারে একটু ঘুরে দাঁড়ানো যাক না। চেনা যাক না, অসমের মাটি ও মানুষকে? বরাকেও তো দু’একজন শীলা বরঠাকুর আছেন। ওখানকার মাটিও চাইছে এমনই এক কাঊকে। চাইবেই। একই আকাশ, একই বাতাস যে এর ! শুধু ‘বিমানে চড়ে এসে’ কলকাতার শব্দ দূষণ শুনতে দিচ্ছে না সে আহ্বান। এবারে যে ছোট কাগজের মেলাটি হচ্ছে সে মেলা একটু হলেও যদি এ দূষণ মুক্তি ঘটায়, গাঁয়ে গঞ্জের নির্মল বাতাস টেনে আনে তবেই আমাদেরও আশা করবার থাকবে অনেক কিছু।
মূল লেখাঃ ৩ থেকে ৫ মার্চ , ২০০৬ । সম্পাদনাঃ ১০-০১-১০
7 comments:
আমাদের বাড়ির পাশের এই অসমিয়া ভাষা সম্পর্কে আমার একটা অস্পস্ট ধারনা ছিল মাত্র। এই ভাষা যে এত উন্নত তা কখনো ভাবতে পারিনি। 'ফেলানি' এবং উপরের এই তথ্য সমৃদ্ধ লেখাটি না পড়লে তা হয়তো কোন দিন জানতে পারতাম না। ওখানকার নাড়ি জাগরনের এই জোয়ারের কথা জেনে মনে শান্তি পেলাম, বাংলাতেও এই জোয়ারের টান সঞ্চারিত হোক এমনটা স্বপ্ন দেখি, কবে যে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে জানি না। মায়ের উন্নতি না হলে সন্তানের উন্নতি হবে কি করে? আর সন্তানের উনতি না হলে যে জাতির উন্নতি হতে পারে না। কেবল মাত্র এক জন ভাল 'মা' ই পারে ভাল জাতি উপহার দিতে।
এই লেখাটি আরোও বেশি প্রচার হওয়া প্রয়োজন বিশেষ করে আমাদের বাংলা দেশে। অনুমতি পেলে এই লেখাটি নীল নক্ষত্র এবং স্মৃতিকণায় সুত্র সহ প্রচার করতে পারি।
করে দিন খালিদদা! আমার আপত্তি নেই! তবে দাঁড়ান আমি আপনাকে জানাচ্ছি। সেদিন ১০ তারিখে গুয়াহাটি যাবার আগে তাড়াহুড়ো করে আপ্লোড করে গেছি। কিছু বানান ভুল থেকে গেছে। ঠিক করে জানাচ্ছি।
শীলা বরঠাকুর এর মতো সাহিত্যপ্রেমীর পরিচয় জেনে ভালো লাগল। তার মতো মানুষের বড় প্রয়োজন। আসামের সাহিত্য যে এত সমৃদ্ধ তা আমার জানা ছিল না- একথা অকপটে স্বীকার করছি। আসামের নারীদের মধ্যে লেখালেখির যে উৎসাহ তিনি সৃষ্টি করতে পেরেছেন, সেরকম সক্রিয় নারী সাহিত্যকর্মী আমাদের দেশে কিন্তু একটাও নেই। আমাদের দেশের নারীরা সাহিত্য চর্চা করেননা (দু'একজন বাদে), তারা রূপচর্চা, পরচর্চা, নাট্যচর্চায় যতোটা সময় ব্যয় করেন, তার সামান্য পরিমাণ সময় সাহিত্য বা গ্রন্থপাঠের জন্য তারা বরাদ্দ করেননা। হয়তো পরিবেশ পাল্টাচ্ছে। কিন্তু তার খবর তেমনভাবে চোখে পড়ছে না। আমার পরিচিত গন্ডীতে (ছাত্রীসহ) তো নারী লেখক একজনও নেই।
ও হ্যাঁ, ফেলানি উপন্যাসের কোন লিংক এই ব্লগে চোখে পড়লনা। একটা লিংক থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। এখন ফেলানি পড়ার জন্য আমাকে আপনার About me লিংক ধরে ঘুরে যেতে হবে।
হ্যাঁ, অসমের ব্যাপারগুলোই আলাদা। তাকে অসমের বাঙালিরাও কতটা চেনে আমার সন্দেহ আছে। এখানে বাঙালিরা মানসিকভাবে পশ্চিমবাংলাতে বাস করে। এর কিছু কারণ অসমিয়ারাও যুগিয়ে রেখেছে বটে। যেমন ওদের অনেকেই বাঙালিদের স্থানীয় লোক বলে ভাবে না। অসমের স্বার্থের কথা যখন বলে তখন বাঙালি হিন্দীভাষীদের কথা ভুলে থাকে। তাই বলে বাঙালি যখন মানসিকভাবে কলকাতাতে বাস করে তখন সেই ঐ 'অস্থানীয়' হবার তত্বটাকেই জোরদার করে। অথচ সারা পূর্বোত্তরকে হিসেবে নিলে বাঙালি এখানে সবচে' সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। এনং এক প্রাচীন জনগোষ্ঠীরো একটি বটে। পূর্ববাংলার বাঙালি ও অসমিয়াদের ভাষা ও সংস্কৃতিও ঐতিহাসিকভাবে অনেক কাছের। বিচ্ছিন্নতাটা বৃটিশ যুগের দান। বাংলাদেশে কিছু মহিলাতো লিখছেন মনে হয়, আমার ব্লগে ওদের দেখছি। সেলিনা হোসেনরা কী করছে? আমি অবশ্য জানিনা 'নন্দিনী' নামের সংগঠনটি কোথায় আছে এবং কত বড়। কিন্তু শিলচরের 'নন্দিনী' কিন্তু বাংলাদেশের সংগঠনের শাখা।
সুশান্ত বর্মন কিন্তু ঠিকই বলেছে, এখানে ফেলানির একটা লিঙ্ক থাকা প্রয়োজন। আমাকে অবশ্য খুজতে হয় না। আমি এবং আমার প্রিয় সবাইকে যাতে কাওকে খুজে বেড়াতে না হয় সেই জন্যই স্মৃতিকণা খুলে রেখেছি। ওখানে গেলে সব প্রিয়দের কোথায় কি হচ্ছে সব কিছুই আপডেট সহ দেখা যায়।
হ্যাঁ, ফেলানি দেব দেব করে থেকে গেছিল। এখন দিয়ে দিয়েছি। দেখুন
Post a Comment