গেল বছর বাঙালুরুর জাতীয় আইন বিদ্যালয় ( NLS, Bangalore) অস্পৃশ্যতার উপর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা আইনের প্রভাব নিয়ে এক অধ্যয়ন চালিয়েছিল। এই অধ্যয়ন দেশের ছটি রাজ্যের ২৪টি জেলাতে করা হয়। অন্ধ্র, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ , রাজস্থান, মায় বর্ণবাদ নেই বলে অহংকার যেখানে তীব্র সেই পশ্চিম বাংলাতেও ওরা অধ্যয়ন চালিয়েছিল । তারা যে তথ্য পেয়েছিল তা এরকমঃ
৬৪৮ জন দলিত মানুষকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, তাদের ৫১৬ জনকে মন্দিরে ঢুকতে দেয়া হয় না যাদের, ১৫১ জন জানিয়েছেন তাদের দেবতার মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা করতে দেয়া হয় না। ৫৮১ জন জানিয়েছেন তাদের নিজেদের বাড়ির বিয়েতে ঢাকঢোল বাজাতে দেয়া হয় না। ১৬% দলিত মানুষ স্বীকার করেছেন যে দলিতদের মন্দিরে ঢুকতে দেয়া হয় না। ১৩% মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এই অস্বীকৃতি থেকেও বোঝা গেছে তাদের বিদ্বেষ কত প্রবল। .
সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে দলিতদের অংশগ্রহণ বেড়েছে, ৫৯১ জন জানিয়েছেন তাদের বিয়ে টিয়েতে ডাকা হয়, মানে নেমন্তন্ন করা হয় । কিন্তু ওই পর্যন্তই। ২৯% জানিয়েছেন অন্যেরা খাওয়া পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হয় । ২৯ শতাংশ দলিত জানিয়েছেন খাবার পরে দলিতদের থালা দলিতদের নিজেদেরই ধোয়া উচিত।
৭ শতাংশ জানিয়েছেন গ্রামের সদর রাস্তা দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে দেয়া হয় না। আরো ৭ শতাংশ জানিয়েছেন প্রভাবশালী বর্ণের কারো সামনে দিয়ে ওরা যেতে পারেন না, গেলেও চপ্পল পরেতো নৈব নৈব চ ! ৯% শতাংশ জানিয়েছেন তাদের সবসময় হাতজোড় করে রেখে কথা বলতে হয়। ২৯ % বলেছেন বড়লোকদের সম্মানে ওদের দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলতে হয়।
১৮ শতাংশ লোক জানিয়েছেন , তাদের এখনো উচু বর্ণের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয় না। এক বড় অংশের দলিত মানুষ জানিয়েছেন যে তারা দলিতদের নিজেদের বাড়িতে ঢুকতে দিয়ে থাকেন, কিন্তু সেই সমান অংশের অন্যেরা আবার এনিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছেন। দলিত মহিলাদের বাড়িতে কাজ করবার কাজে লাগানো হয়, কিন্তু ভেতর বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয় না। বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয় না এমন অনেক সম্প্রদায়কেই কর্নাটক, রাজস্থানআদিতে চিহ্নিত করা গেছে। কিন্তু শুধু বাংলাতেই তেমন ৩৪টি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে ওরা চিহ্নিত করেছেন।
দলিত শিশুকে স্কুলে যেতে দেয়াতো হয়, কিন্তু ওদের পেছনের বেঞ্চে বসত বলা হয়, দুপুরের আহারের বেলা যে স্বতন্ত্র আহারের ব্যবস্থা হয়, সে আর বলতে? ৪০ % অদলিত মানুষ বলেছেন যে তাদের গাঁয়ে কোনো দলিত শিক্ষক নেই।
দলিতরা তবে করেন কী? মানে কোন কাজে লেগে আছেন? দলিতদের এখনো প্রায় পরম্পরাগত কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয় ৫৫৩র মধ্যে ১৫৪ জন দলিত ড্রাম বাজান, ৪২ জন কবর খোঁড়ার কাজ করেন, ৯৭ জন জুতো সেলাইর কাজে লেগে আছেন , ৫৭ জন এর মধ্যে সাফাই কর্মী। তাদের রাজনৈতিক সক্রিয়তাও তাদের জন্যে সংরক্ষিত আসনগুলোতেও সীমাবদ্ধ ।
সেন্টার অফ সোসিয়াল এক্সক্লুসন এ্যান্ড ইনক্লুসিভ পলিসির সঞ্চালক এস জাফেট মানেন যে এই অধ্যয়ন সম্পূর্ণ নয়। তাছাড়া সামাজিক বৈচিত্রতো রয়েইছে। "No study can claim to be totally representative because of social and regional diversity. But this is as comprehensive as it can be as an empirical study. The methodology is scientific."
তার পরে যখন এই দলিতেরা ধর্ম পরিবর্তন করেন, হিন্দুত্বের ধ্বজাধারীরা তাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে, মেয়েদের ধর্ষণ করতে ঝাপিয়ে পড়ে। এই কথা অবশ্য আমার। প্রতিবেদনে বলা হয় নি। গেল বছর উড়িষ্যার খৃষ্টান বিরোধী হামলাবাজির এমনই কিছু কারণ ছিল।
এর পরেও যারা দালিতদের সংরক্ষনের বিরোধীতা করেন বুঝতে কষ্ট হয় না তারা কোন পক্ষের লোক। কোন ভারতের লোক। সেই 'ভারত'কে ঘৃণা করবার সাহস থেকেই শুধু নতুন ভারতের জন্ম হতে পারে।
2 comments:
actually i feel this discripancy and never ending discussion or debate will continue........
many tried
many failed
many discussed
many waited
many debated
many smiled
many cried
many died
still life continues...
all are mute spectators!!!
আমি যখন লিখেছি আর আপনি পড়ে মন্তব্য করেছেন,আমরা দু'জন নিশ্চয় mute spectetors'নই। অন্তত চিন্তাতে আসাটাও প্রতিক্রিয়া জানানোটাও অনেক পারমিতাদি! চিন্তার ঢেঊ গিয়ে এক সময়ে দেবার জায়গাতে ধাক্কা দেয়। কী ভাবে? তবে যে সে নিয়েও আমাকে একটা লেখতে হয়। লিখব কখনো!
Post a Comment