আমার চেতনার রঙে রাঙানো এই খেলা ঘরে:

~0~0~! আপনাকে স্বাগতম !~0~0~

*******************************************************************************************************

Tuesday, 6 October 2009

On Cultural Hegemony


Swajatyer Ohomikar Theke Mukti Daner Shikkhai Ajaker Diner Prodhan Shikkha: Rabindranath Thakur






সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রসঙ্গে
ভাবাদর্শের যায়গা থেকেই অনুসন্ধান করতে হবে সংস্কৃতিরঃ তপোধীর এটাই শিরোনাম সংবাদের। উপশিরোনামে রয়েছে উরগেন্দ্র ভট্টাচার্যের লেখা হেমপ্রভা প্রকাশনীর সাংস্কৃতিক আধিপত্য পুস্তকের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। প্রকাশকও বড়, বড় উদ্বোবোধকও। লেখকের কথাতে পরে আসছি। হেমপ্রভা প্রকাশনীটি পূর্বোত্তর ভারতের সবচে বড় দৈনিক কাগজ যুগশঙ্খের প্রকাশনা শাখা নতুন খুলেছে। আমাদের এ রাজ্যে বাংলা প্রকাশনার ব্যবসাটি একেবারেই সাম্প্রতিক। তাতে যুগশঙ্খের যোগদান নিঃসন্দেহে সুসংবাদ ।  এর আগে যারাই বই বের করতেন সবই প্রায় ব্যক্তিগত উদ্যোগ। কোনো প্রকাশনার নাম থাকলেও তাই। ব্যতিক্রম, নাইন্থ কলাম, সাময়িক অসমের মতো কিছু প্রকাশন যেগুলো গুয়াহাটি থকে কাজ করে সেগুলোও এখনো ব্যবসায়িক উদ্যোগ হতে পারে নি।  যদিও ব্যতিক্রম সেই লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়েছে। বই তাঁরা ভালোই বের করেন , বিষয়ে ও অলঙ্করণে ফেলনা নয় মোটেও। এদেরই অনেকেতো দাবি করছেন গুণবত্তাতে তাঁরা এখন কলকাতাকেও পেছনে ফেলে দিয়েছেন। কথাটা ব্যবসার দিক থেকে সত্য নয়। পূর্বোত্তরের  যারাই  কলকাতা থেকে বই বের করেন তাদেরো ভাগ্য একই। নিজেরাই গাঁটের পয়সা খরচ করেন। তপোধীর ভট্টাচার্যের মতো ভাগ্যবান হাতে গোনা, যাদের বই অন্যে বের করে এবং বিক্রী করে ।  সেদিক থেকে  হেমপ্রভা যদি দাঁড়ায় তবে এ রাজ্যের লেখক অনেকেরই সুদিন আসতে দেরি হবে না। এখানকার লেখকদের বই কিনে পড়বার এক সংস্কৃতিও দাঁড়িয়ে যাবে। আর সেরকম হলে অনেক ভালো বইএর সঙ্গে প্রচুর বাজে বইও যে বেরুবে সে নিশ্চিত। এতে আক্ষেপ করে লাভ নেই বটবৃক্ষ থাকতে হলে তার তলায় অনেক তৃণ-আগাছাও থাকে। এদেরও থাকতে দিতে হয়। এরা থেকে মাটির উর্বরতার প্রমাণ দেয় তাতে বটবৃক্ষও মাথা তুলবার সাহস পায়।  যারা দিতে চায় না, তাঁরা উন্নাসিক পণ্ডিত, সংসার কী রকম করে চলে এ নিয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। বস্তুতঃ এই রাজ্যে বই লেখা ও প্রকাশের শিল্প পিছিয়ে থাকার জন্যে এই সব  উন্নাসিক পণ্ডিতরাও অনেকটাই দায়ী। তাঁরা আমাদের মতো  আগাছাদের আমল দিতে মোটেও   চান না। নিজেদের কেঊকেটা বলে ভাবেন। এটা তারা অন্যদের আগাছা নামটি দিয়ে জাহির করেন। মরুভূমির ক্যাকটাস হয়ে থাকতেই বোধহয় এরা ভালোবাসেন। ব্যতিক্রমের মতো প্রকাশন সংস্থা , এবং এখন হেমপ্রভাক্যাক্টাসদের ছেড়ে তৃণদেরো অবহেলা করছেনা দেখে ভালোই লাগছে। সুদিন ফিরছে।
                  



উরগেন্দ্র ভট্টাচার্য বরাক উপত্যকার তৃণদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে আমি কলেজ জীবন থেকে চিনি। তিনিও আমাকে।এক সময় কাছাড়ে সি পি আই ( এম এল-লিবারেশন)-এর একমাত্র   সংগঠক ছিলেন। আমরা বহুদিন একসংগে রাজনীতির আড্ডা দিয়েছি। তাঁর রাজনীতি  আমার সবসময়েই সেকেলে মনে হয়েছে। কিন্তু তাই বলে তিনি ভালো লেখক হতে পারবেন না , সেরকম কোনো কথা নেই। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার তাদের দলের অনেকে আমার ব্যক্তিগত বন্ধু। মাকুমের হরেন্দ্রনাথ বরঠাকুর অসমিয়া ভাষা ও সাহিত্যের একজন খ্যাতনামা লেখক ও সংস্কৃতি কর্মী। আমার সম্পাদিত কাগজ প্রজ্ঞানের তিনি নিয়মিত লেখক। তাঁর বহু চিন্তাকেও আমার সেকেল বামপন্থা বলে মনে হয়। কিন্তু সেটি তার চিন্তাতেই। তাঁর লেখা হয় তথ্য সমৃদ্ধ, সুশৃঙ্খল। উরগেন্দ্র  ভট্টাচার্যের সমস্যা হলো তিনি তাঁর চিন্তাকে সাজিয়ে উপস্থাপন করতে পারেন না। কিন্তু উপদেশটেশ প্রচুর দেন।  কী বলতে চাইছেন, বোঝা মুস্কিল হয়। যুগশঙ্খ সহ শিলচরের দৈনিকগুলোতে তিনি লেখেন । বহুদিন পড়বার চেষ্টা করেছি। যেটুকুন বুঝি তাতে মনে হয় ষাটের দশকের সাংস্কৃতিক চিন্তাতেই তিনি আটকে আছেন। এবং এখনকার প্রজন্ম সেই চিন্তাকে গুরুত্ব দেয় না বলেই তাঁর আক্ষেপ। তাঁর মনে হচ্ছে সবই বোর্জুয়া সাংস্কৃতিক আধিপত্যের দায়। বর্তমান গ্রন্থে তিনি কী লিখেছেন জানিনে। শিলচর থেকে এখানে বই পাওয়াও মুস্কিল। আর কৌতুহল নিবৃত্তির প্রয়োজন দেখা না দিলে তাঁর লেখা পড়বার পূর্বতন অভিজ্ঞতার জন্যেই আনিয়ে পড়বার আগ্রহ হবে না। ৫ অক্টোবর সোমবারের যুগশঙ্খের আটের পৃষ্ঠাতে বেশ বড় করে  উপরে যে সংবাদের কথা লিখেছি সেটি বেরিয়েছে। এতে তাঁর বক্তব্যের উদ্ধৃতি আছে। তিনি সেই উদ্বোধনী সভাতে বলেছেন, সাম্যবাদী সংস্কৃতি সাম্রাজ্যবাদী সংস্কৃতির কাছে মাথা নত করেছে। আর সাম্রাজ্যবাদ ধনবাদেরই বিকশিত রূপ। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হল সমাজবাদী সংস্কৃতি। এই তত্ব ও তথ্যের অনুসন্ধানের প্রয়াস করা হয়েছে বইটিতে। তিনি বুঝি আরো বলেছেন, মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম তিনটি। যে তিনটিকে সমস্ত প্রাণী জগতের মৌলিক চাহিদা বলা হয়। এই তিনটি চাহিদা হলো খাদ্য, যৌনতা, আত্মপ্রকাশ বা আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। এর উপর ভিত্তি করেই সমস্ত প্রাণীজগতের মস্তিষ্ক কাজ করে একে বলা হয় মস্তিষ্কের উৎপাদন। মস্তিষ্কের উৎপাদনের বাস্তবতাই হল সংস্কৃতি। তবে একবার নয় , বারবার-বহুবার উৎপাদিত উৎপাদনের বাস্তবতাই সংস্কৃতি। 





                     কথাগুলো যে বেশ দুর্বোধ্য এবং অগোছালো হয়ে গেছে পাঠক মাত্রেই ধরতে পারবেন। হতে পারে সাংবাদিকটি তাঁর কথাগুলোকে ধরে উঠতে পারেন নি। কিন্তু একই সাংবাদিক যখন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত যুগশঙ্খের নির্বাহী অধিকর্তা নীলোৎপল চৌধুরীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে লেখেন, কাগজ কল থাকা সত্বেও এ উপত্যকার বিদগ্ধ লেখকেরা কাগজের বেশি দাম সহ নানাবিধ সমস্যার যে সম্মখীন হন, উল্লেখ করেন এ কথা । ফলে অনুসন্ধানী পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারেন না লেখকেরা। তাই অতি কম খরচে গ্রন্থ প্রকাশনার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে হেমপ্রভা প্রকাশনী। তখন, কই, একটি বর্ণও আমাদের বুঝতে অসুবিধে হয় না।
            আসলে ওই যে লিখলাম উরগেন্দ্র ওই রকম ভাষাতেই কথা বলেন। মানুষের তিনটি মৌলিক চাহিদার কথা সহজ ভাষাতে আমরা যত্র তত্র উল্লেখ করিখাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান। তিনি বুদ্ধিজীবি বলেই একটূ গুলিয়ে দিয়েছেন। বাসস্থানকে তালিকার থেকে একেবারেই বাদ দিয়েছেন । বস্ত্রকেও  তালিকার থেকে বাদ দিয়েছেন বটে, আসলে যৌনতাকে এর মধ্যেই জায়গা করে দেয়া যায়। এগুলো মানুষের শারীরিক চাহিদা। এর মধ্যে আত্মপ্রকাশ বা আধিপত্যের কথা আসেই না। এটি মানুষের মানসিক চাহিদার মধ্যে পড়ে।  কথাটা তিনি বলেছেন প্রায় ঠিকই বটে , কিন্তু আবার আত্মপ্রকাশ ও আধিপত্য শব্দদুটোকে একত্রে লিখে আমাদের ভয় বাড়িয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়টি আসলে প্রথমটির অনেক রূপের মধ্যে একটি রূপ মাত্র।
                সংস্কৃতি যে মানুষের মানসিক উৎপাদন কথাটা তিনি মোটের উপর ঠিকই বলেছেন। কিন্তু অনেক প্রশ্ন করেই তাঁর কথাটাকে বুঝে নিতে হবে। যেমন খাদ্য আবার মানসিক উৎপাদন হলো কী করে। চাষি যে ধান চাষ করে সেওতো বারাবার হয়ে থাকে , সেও কি সংস্কৃতি ? তাই যদি হবে তার আবার সাম্যবাদী, সাম্রাজ্যবাদী, সমাজবাদী বিভাজন সম্ভব কী করে ?    সাম্যবাদীরা সাম্রাজ্যবাদের কাছে আত্ম সমর্পণ করেছেন বলেই কি এখন সমাজবাদী সংস্কৃতির কাছে আশ্রয় নিতে হবে ? এ দুটো কি আলাদা শিবির। নিশ্চয়ই নয়। উরগেন্দ্র বলবেন। আসলে তাঁর শব্দ চয়ন ঐ রকমই ।  বাংলাতে একটি কথা আছে, চাল টিপলেই হাড়ির খবর মেলে ।  এখান থেকেই বুদ্ধিমানেরা বাকি বইএর খবর পেয়ে যাবেন।
                 সেই উদ্বোধনী সভাতে শিলচরের অনেক বাঘা বাঘা গুণিজন উপস্থিত ছিলেন। বিখ্যাত লেখক গণেশ দে-তো গ্রন্থটি সম্পর্কে বলেই ফেললেন, এই অঞ্চলে বৌদ্ধিক মহলে রচিত স্থায়ী শিলালিপি। উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য বলেছেন বইটি, অনেক বড় বইয়ের উপক্রমণিকা। একবিংশ শতকের প্রথম দশকের শেষ প্রান্তে এসে আমাদের চারদিকের রূপান্তরশীল জগতকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে এই গ্রন্থটি। আমাদের মনে হয় হেমপ্রভার ডাকেই এঁরা এসছিলেন।  উদ্বোধক হিসেবে উপাচার্যও সময় দিয়েছেন। প্রেস ক্লাবের সভাপতি সনৎ কৈরি সভাতে পৌরহিত্য করেছেন। এবং বলতে হয় বলেই বলেছেন। আমাদের সে নিয়েও কোনো প্রশ্ন বা বিরোধ নেই । আমাদের প্রশ্ন নেই  উরগেন্দ্র ভট্টাচার্যের বই প্রকাশ ও প্রকাশনা সংস্থা বেছে নেবার অধিকার নিয়েও । আমাদের প্রশ্ন     সংস্কৃতি শব্দটার ব্যখ্যা নিয়ে ।  সাংস্কৃতিক আধিপত্য কথাটা র মানে নিয়ে।
              সংস্কৃতি যে কী বস্তু উদ্বোধক নিজেও তাঁর একটা ব্যখ্যা দিয়েছেন, । তিনি বলেছেন, সংস্কৃতি শুধু নাচ-গান বাজনা বা অনুষ্ঠানই নয় । সংস্কৃতির অনুসন্ধান করতে হবে ভাবাদর্শের জায়গা থেকে। পাশাপাশি স্মরণীয়, সংস্কৃতি  প্রসঙ্গে আধিপত্যের কথাটূকু এসে যায় স্বাভাবিক ভাবেই । তবে আধিপত্য সবসময় প্রকাশ্যে আসে না । তাই বিষয়টিকে নতুন করে বোঝার জায়গা রয়েছে। কথাগুলো  আপাত দৃষ্টিতে স্পষ্ট  , গোছালো। এবং সঠিক ।  কিন্তু মানুষ যে কেমন নিজেকে বাঁচিয়ে মন্তব্য করে তাঁর প্রমাণ হলো ঐ ভাবাদর্শ শব্দটি। কাঁচা বাংলাতে লিখলে এটি একটি ভেক  শব্দ। Abstract . ভালো বাংলাতে বিমূর্ত। পাঠক ইচ্ছে মতো অর্থ এতে আরোপ করতে পারেন। কিছু আরোপ না করে কিচ্ছু বুঝিনি বলে বাদ দিয়েও এগুতে পারেন । শ্রী ভট্টাচার্য সামান্য এগুলে শ্রেণি ভাবাদর্শ-টর্শ জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করতেন। হয় বামপন্থার বাজার গেছে বলে করেন নি। অথবা করেছেন সাংবাদিকটি  লেখেন নি। এর বেশি দূর তিনি যেতেন না।  বড়জোর সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্রে অসমিয়া ( হিন্দি বললেও বলতে পারতেন)  আধিপত্যের কথা বলতেন । কিন্তু বর্ণ, ধর্ম, ভাষা, অঞ্চল, নৃগোষ্ঠীয় স্বার্থের ভাবাদর্শ থেকে বলে কথাটিকে স্পষ্ট করতেন না মোটেও ।  কারণ বরাক উপত্যকাতে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির আধিপত্যের এঁরাই পুরোহিত। অসম বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর নেতৃত্বেই বাঙালির বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হচ্ছে। বাঙালিদের প্রিয় দিন ক্ষণ উদযাপিত হয় । বাঙালিদের প্রিয় ব্যক্তিত্বের স্মারক তৈরি হচ্ছে তাঁর নেতৃত্বে। শিলচর শহরেও যে তাই হচ্ছে এটা এই সাস্কৃতিক আধিপত্য বিরোধীদের কাউকেই কোনোদিন বিরোধীতা করতে দেখা যায় নি। তপোধির ঠিকই বলেছেন আধিপত্য সবসময় প্রকাশ্যে আসে না এঁরা সব্বাই  দাঙ্গা টাঙ্গার মতো অবস্থা হলে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিরোধীতা করেন বটে । বাঙালি জাতীয়বাদ এর থেকে রক্ষা পাবার একমাত্র নিদান এও বলেন ,  আর অন্য এক আধিপত্যের পথ প্রশস্ত করেন। কিন্তু রোজকার সাংস্কৃতির অনুশীলনে যে   বাঙ্গালি শব্দটার মানে করে দেয়া হচ্ছে উচ্চবর্ণের হিন্দু সিলেটি বাঙ্গালি এর বিরুদ্ধে কথা বলতে কাউকে শুনিনি কোনো দিন। কাছাড়ি বাঙালি বলে কাছাড়ে যে একটই ঔপভাষিক সম্প্রদায় আছে সে কথাতো এইসব বুদ্ধিজীবিরাই ভুলিয়ে দিয়েছেন। সেই ক্ষোভে সম্প্রতি জগন্নাথ চক্রবর্তী সেই উপভাষা নিয়ে যে এক অভিধান লিখেছেন আর তাতে ভাষাটির নাম দিয়েছেন বরাক বাংলা  
              সেদিনের সভাপতি সনৎ কুমার কৈরি আমার কৈশোর জীবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বয়সে যদিও অনেক বড়। তিনি বাংলাতে লেখেন। ভাষা আন্দোলন নিয়েও তিনিই প্রথম বই লিখেছিলেন। তিনি আসলে হিন্দি ভাষী। পূর্বপুরুষ কোনো একসময় বিহার বা উত্তর প্রদেশ থেকে এসছেন। বাড়িতে তাঁরা হিন্দিতেই কথা বলেন। কিন্তু বাইরে নিজেকে বাঙালি বলেই পরিচয় দেন। কারণ এ নইলে এই শহরে তাঁর প্রতিষ্ঠা জোটবে না। হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যের এই উপত্যকাতেও ভাত নেই। দায়ে পড়ে বাঙালি হওয়া। এও কি আধিপত্য নয় ? অসমিয়া আধিপত্যবাদের সঙ্গে আমাদের তবে তফাৎটা কোথায় !  বিজয় ভট্টাচার্যের কবিতার ভাষা ধার করে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, পুড়ে পুড়ে কবে স্বর্ণ হবে আমাদের সন্মিলিত পাপ?  এই কবিও অসমিয়া আধিপত্যের প্রশ্নে আপোসহীন । কিন্তু বাঙালি আধিপত্যের প্রশ্নে কট্টর ! হিন্দু আধিপত্যের প্রশ্নেও তাঁর মুখে অনেক দিন এই অদ্ভূত প্রশ্নও শুনেছি, বরাকের এতো ভাষা শহিদের ভিড়ে  একজনো  মুসলমান নেই কেন ? বোধকরি তাঁর মতো ব্যক্তিদের প্রশ্নকে তুষ্ট করতেই ইমাদ উদ্দিন বুলবুলকে বই লিখে জানাতে হয়েছিল ভাষা আন্দোলনে মুসলমান মধ্যবিত্তের ভূমিকা কী ছিল । আধিপত্যের এক বড় প্রমাণ হলো ১৯৮৬র ভাষা আন্দোলন নিয়ে এঁরা তেমন উচ্চ বাচ্য করেন না। কারণ সেই আন্দোলনে সত্যি সত্যি বহু মুসলমান যুবককে আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল । শুধু তাই নয় । সে আন্দোলনে সারা রাজ্যের জনজাতীয় সংগঠনগুলোও সামনের সারিতে এসে পড়েছিল। ইতিহাস লিখতে গেল সে কথাগুলোও লিখতে হবে যে ! মূলত তাদের হুমকিতেই  ১৯৮৬র ১৫ আগষ্ট সেবা সার্কুলার স্থগিত হয়েছিল।


            এ নিয়ে পরে আমার আরো লিখবার ইচ্ছে রইল ।  আপাতত এনিয়ে শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের একটা লেখা পাঠক পড়তে পারেন। 


No comments: